অনুচয়নে: কাজী কাসেম :
বাংলাদেশে মুসলমান সমাজে রোজার মাসে ইফতার নিয়ে একটা হুলুস্থল কান্ড বেঁধে যায়। হাটে ঘাটে ফুটপাথে মজাদার ইফতারি নিয়ে হৈ হৈ কান্ড রৈ রৈ ব্যাপার । ঠিক মত রোজার নিয়ম কানুন পালন নিয়ে যত না মাথা ব্যাথা তার চেয়ে বেশী তৎপরতা ইফতার করা নিয়ে। রোজাদারদের চেয়ে বে-রোজদারদের-ই তৎপরতা বেশী দেখা যায়। ভাব খানা এই রকম – নামাজ ভি পড়লাম না, রোজাও ভি করলাম না , ইফতার ভি না করলে তো কুফফর (কাফের) হয়ে যাব। এ তো গেল এফতার নিয়ে আধিক্কিপনা। রোজার শেষে এল ঐ ঈদ। ঈদের বাজার নিয়েও খরিদ্দার আর দোকানদেরও তোগলকি কান্ড কারখানা। খরিদ্দারদেরও জেদ আমাকে বাজারের সেরা ডিজাইনের লেহেঙ্গাটা- শাড়িটা- জামাটা কিনতে হবে। দোকানদারদেরও ভাব খান এই রকম- খরিদ্দার বেটারা এবার পাইছি তোদেরে। প্রকৃতি দামের দুই গুন তিন গুন দাম হেকে বসে থাকে। নাছোড় ক্রেতাদেরও ভাব এই রকম- বছরের একটা দিন কি করা! এ তো গেল ঈদের বাজার! ঈদের দিনে নামাজ শেষে হাইরে কোলাকুলি-ঝাকা ঝাকি- ভাব খানা এই রকম –যত ঝাকি তত নেকি। কোলা কুলি ঝাকা ঝাঁকির পর শুরু হয়- ঈদ মোবারক জানানো সামনা সামনি ও ফোনে ফোনে। বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় এই ঈদ মোবারক জানানোর আবার স্থানীয় কথ্য ভাষা গত বৈচিত্র আছে। এবার দেখা যাক কোন জেলার ঈদ মোবারকের ভাষাগত বৈচিত্র-
সিলেট- হক্কলেরে ঈদ মোবারক
ঢাকা- সব্বাইকে ঈদ মোবারক
পুরান ঢাকা- ছব্বাইকে মাগার ঈদ মোবারক
নোয়াখালি- আন্নেগ বেজ্ঞুনে ঈদ মোবারক জানাই
বরিশাল- হেইয়া মনু আমনেগ হগলেরে মোর পক্ষ থেকে ঈদ মোবারক জানাইলাম
চিটাগাং-ফোয়া ফুরি বেকতেরে ঈদ মোবারক জানাইলামযে
রংপুর- তুমাগরত ঈদ মোবারক
রাজশাহী- কি হে ছকলকে ঈদ মোবারক বুলছি
পাবনা-ঈদ কি জিনিসরে ভাই? খায় না পিন্দে।
ময়মনসিংহ-তোরারে ঈদ মোবারক কিলাম।না আইলে অক্করে কুইট্টা এ্যালবাম।
ঈদ মোবারক স্থানীয় ভাষা সংগ্রহেঃ বোন খাদিজা